عـن ابـن عـمـر( رضى الله عنه ) قال قال رسـول الـلـه (صلى الـله عليه وسلم ) – إن هــذاه الـقـلـوب تـصـدا كـمـا يـصـدا الـحـديـد إذا أصابـه المـاء قـيـل يارسـول الـلـه ومـا جــــلا ء هـا قـال كــثــرة ذكــر الـمـوت وتـلاوة الـقـرآن . ( رواه بيهقى )
ইবনে ওমর (রা) বলেন : একদা রাসুল (সা
বলেছেন : এই অন্তরসমূহে মরিচা ধরে’যে ভাবে লোহায় মারচা ধরে যখন উহাতে পানি লাগে । তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো : হে আল্লাহর রাসুল (সা);উহার পরিশোধক কী ? (উহা থেকে বাচার উপায় কি ?) তিনি বললেন : বেশী বেশী মূত্যুর স্মরণ করা এবং কুরআন তেলাওয়াত করা । ( বায়হাকী )
৬–ইহকালে জ্যোতি পরকালে সঞ্চয়: পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মধ্যে ইহকালে জ্যোতি পরকালে সঞ্চয় নিদ্দারিত রয়েছে ।রাসুলের হাদিস থেকে জানা যায় হযরত আবু যর (রা) থেকে বণিত । তিনি বলেন আমি বললাম : হে আল্লাহর রাসুল (সা) আমাকে উপদেশ দিন । তিনি বললেন : আল্লাহকে ভয় করা তোমাদের কতর্ব্য। কেননা এটা ইসলামের মূল মন্ত্র ।আমি বললাম : হে আল্লাহর রাসুল (সা) আমাকে আর একটা উপদেশ দিন ।তিনি বললেন:তোমাদের কুরআন পড়া উচিত ; কেননা কুরআন তোমাদের জন্য ইহকালে জ্যোতি পরকালে সঞ্চয় ।(ইবনে হাব্বান)
৭– সুপারিশ করার অধিকার লাভ : যে ব্যক্তি কুরআনের শিক্ষা লাভ করবে নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করবে ও কুরআন অনুযাই নিজের জীবন গঠন করবে সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন তার পরিবারের সদস্যদের জন্য সুপারিশ করার অধিকার লাভ করবে ।
وعـن عــلى ( رض ) قـال : قـال رسـول الـله – صلى الله عليه وسلم – مــن قــرء الـقـرآن فـاســتــظــهــره فـاحــل حــلالـه وحــرم حــرامـه أدخــلـه الـلـه الـجـنـة . وشــفــعــه فى عـشـرة مــن أهــل بــيــتــه كــلــهــم قــد وجـبــت لــهــم الـنـار . ( رواه إبن ماجه )
হযরত আলী (রা) বলেন ; রাসুল (সা
বলেছেন : যে ব্যক্তি কুরআন পড়েছে এবং মুখস্হ করেছে ; অতপর এর হালালকে হালাল এবং হারাম জেনে আমল করেছে ,তাকে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তার পরিবারের এমন দশ ব্যক্তি সম্পকে তার সুপারিশ গ্রহণ করবেন যাদের দোযখবাসী হওয়া অবধারিত ছিল । ( ইবনে মাজাহ )
৮–আল্লাহর নিকট সম্মানিত হওয়ার মাধ্যম :কুরআনের জ্ঞানই হচ্ছে প্রকৃত জ্ঞান। আর এ জ্ঞানের প্রচার ও প্রসারের মধ্যেই নিহিত আছে মানবতার প্রকৃত কল্যাণ । ইসলামের দৃষ্টিতে এই জ্ঞানের বাহক ও শিক্ষাথীরাই হচ্ছে সবোত্তম মানুষ ।
عــن عــثــمــان عــن الـنـبـى – صلى الله عليه وسلم – قال : خـيـركم مــن تـعـلـم الـقـرآن وعـلـمـه . ( بخارى ومسلم )
৯– অত্যধিক সওয়াব লাভের মাধ্যাম : কুরআন যেহেতু আল্লাহ পাকের বাণী ইহার তিলাওয়াতে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন ।তাই কুরআন অত্যধিক তিলাওয়াত করা সওয়াব লাভের মাধ্যাম। কুরআন তিলাওয়াতকারীকে এবং এর উপলব্দিকারীকে অধিক সওয়াব দান করে থাকেন ।এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা) বলেন :=
وعـن عبد الـله بن مـسـعـود – رضى الـلـه عنه قـال : قال رسول الـلـه – صلى الله عليه وسلم : مــن قــرأ حــرفـا مــن كـتاب الـلـه فـلـه به حـسـنـة والـحـسـنـة بـعـشـر أمـثـالـهـا ، لاأقــول ، آلــم حرف ، ولــكـن آلف حرف ، ولام حرف ، وميم حرف . ( ترمذى )
১০- জান্নাত পাওয়ার উত্তম মাধ্যম :=যে ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত ও মুখস্হ করেছে এবং যথাযথভাবে তার আমল করেছে তার জন্য রয়েছে বেহেশতের সুসংবাদ ।এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা) বলেন := কিয়মতের দিন কুরআন তেলাওয়াত কারীকে বলা হবে , কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকো আর বেহেশতে প্রবেশ করতে থাকো ।,অপর হাদীসে বলা হয়েছে :=
وعن عبد الله بن عمروبن العاص (رضى الله عنه ) قـال : قال رسول الـلـه – صلى الـلـه عليه وسلم – يـقـال لـصـاحـب الـقـرآن : إقــرأ ورق ، ورتـل كـمـا كـنـت تـرتــل فـى الـدنـيـا . فــإن مــنــزلــك عــنـد آخــرأيــة تـقــرؤهـا . (ترمذى )
হযরত আবদুল্লাহ ইবনুল আস (রা) বলেন । রাসুল (সা) বলেছেন := কুরআনের সাথীকে বলা হবে , তুমি পড়তে থাক , আর উপরে আরোহন করতে থাক । তুমি দুনিয়াই যে ভাবে তিলাওয়াত করতে । তুমি সব শেষে যে আয়াত পড়বে সে খানেই তোমার বাসস্হান । ( তিরমিযী)
১১– কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে : কুরআন কিয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে । কাজেই বেশী বেশী করে কুরআন তিলাওয়াত করা উচিত । এ প্রসঙ্গে মুসলিম শরীফের একটি হাদিসে উল্লেখ আছে যা হযরত আবু হুরায়রা (রা)হতে রেওয়ায়েত আছে ।
-** أفـضـل الـعـبـادة تـلاوة الـقـرآن ، إقــرءوا الـقـرآن فـإنـه يـأتــى يـوم الـقـيـامـة شـفـيـعـا لاصـحـابـه . (مسلم
কুরআন তিলাওয়াত শ্রেষ্ঠ ইবাদত । তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর , কারণ কিয়ামতের দিন কুরআন পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে । (মুসলিম )
১২– অন্তরের ইচ্ছা পূরণ হয় : কুরআন তিলাওয়াতকারীর অন্তরের ইচ্ছা আল্লাহ তায়ালার কাছে চাওয়ার আগেই তা পূরন করে দেন । এ প্রসঙ্গে হাদীসে বলা হয়েছে ।
وعن أبى سـعـيد (رضى الله عنه ) قـال : قـال رسول الـله – صلى الـلـه عليه وسلم : يـقـول الرب تبارك وتـعـالى : مـن شـغـلـه الـقـرآن عـن مـسـألـتى أعـطـيـتـه أفـضـل مـا أعـطـى الـسـائـلـيـن ، وفـضـل كـلام الـلـه عـلـى سـائـر الـكـلام كـفـضـل الـلـه عـلـى خـلـقـه . (رواه ترمذى )
হযরত আবু সাঈদ (রা) বলেন । রাসুল (সা
বলেছেন :আল্লাহ তা,য়ালা ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি কুরআন অধ্যয়নে নিয়োজিত থাকায় আমার নিকট কিছু চাওয়ার সময় পায় না তাকে আমি ঐব্যক্তির চেয়ে শ্রেষ্ঠ নিয়ামত দান করব যে আমার কাছে চায় । আল্লাহর সমগ্র সৃষ্টির ওপর আল্লাহর যেমন শ্রেষ্ঠত্ব তেমনি দুনিয়ার অন্যসব বাণীর ওপর আল্লাহর কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ।(তিরমিযি)
১৩– ফিরেশতাদের সমসম্মান দেয়া হবে :কুরআন তিলাওয়াতকারী ব্যক্তিগণ ফিরেশতাদের সঙ্গী হবেন । সম্মানের দিক দিয়ে তাদের সমতুল্য হবেন ।এ প্রসঙ্গে রাসুলের বাণী: হযরত আয়েশা (রা) বলেন : রাসুল (সা) বলেছেন : কুরআনের অভিজ্ঞ ব্যক্তি ফিরেশতাগণের সাথে থাকবেন । ( বোখারী,মুসলিম )
عـن عـائـشـة – رضى الـلـه عنها ، قـالـت : قـال رسـول الـلـه – صلى الـلـه عليه وسلم : الـمـاهــر بـالـقـرآن مـع الـسـفـرة الـكـرام الـبـررة ، والـذى يـقـرأ الـقـرآن ويــتــتــعــتــع فـيـه وهـو عـلـيـه شـاق لـه أجـران .( متفق عليه )
হযরত আয়েশা (রা) বলেন : রাসুল (সা) বলেছেন :কুরআন পাঠে দক্ষ ব্যক্তি সম্মানিত পূণ্যবান লেখক ফিরেশতাগণের সঙ্গী( সম্মানের দিক দিয়ে তারা সম্মানিত ফিরেশতাগণের সমতুল্য ) আর যে ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত করতে গিয়ে মুখে আটকে যায় ,বার বার ঠৈকে যায় এবং উচ্চারণ করা বড়ই কঠিন বোধ করে তার জন্য দ্বিগুণ সওয়াব ।শুধু তিলাওয়াত করার জন্য একগুন আর কষ্ট করার জন্য আর একগুণ। ( বোখারী,মুসলিম )
১৪–কুরআনহীন হৃদয় শূন্য ঘরের সমতুল্য := মানব জাতিকে জাহিলিয়াতের অন্ধকার হতে উদ্ধার করে হেদায়েতের রাজপথ দেখিয়েছেন আল-কুরআন । এ দিক দিয়ে কুরআন হচ্ছে উত্তম হেদায়েতকারী গ্রন্হ । কাজেই এ কুরআন যার অন্তরে নেই সে হৃদয় শূন্য ঘরের সমতুল্য তাতে কোন সন্দেহ নেই । রাসুল (সা) বলেছেন:-
قـال رسـول الـلـه – صلى الـلـه عليه وسلم : إن الـذيــن لــيــس فــى جــوفــه شــيـئ مــن الـقـرآن كـالـبـيـت الـخـراب . (رواه الترمذى )
যে হৃদয় আল-কুরআনের কোন জ্ঞান নেই সে হৃদয় শূন্য ঘরের সমতুল্য ।(তিরমিযী)
আসুন আমরা কুরআন তেলাওয়াত করি এবং দুনিয়া ও আখেরাতের পূণ্য কামাই করি । আমিন
http://httpquranerhafiz.blogspot.com/http://ipcblogger.net/bashar/?page_id=751